Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

বাংলাদেশের কৃষি উন্নয়ন ও সাফল্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর

বাংলাদেশের কৃষি উন্নয়ন ও সাফল্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর
মোঃ বেনজীর আলম
কৃষি বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল ভিত্তি। দেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি মানুষ এখনও প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কৃষির ওপর নির্ভরশীল। শ্রমশক্তির ৪০.৬২ শতাংশ এখনও কৃষিকাজ নির্ভর (২০১৬-১৭ সালের শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী)। অনেক ধরনের প্রতিকূলতা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করেও বাংলাদেশ বিগত ৫০ বছরে খাদ্য উৎপাদনে দৃষ্টান্তমূলক অগ্রগতি অর্জন করেছে। মোট দেশজ উৎপাদন তথা জিডিপিতে কৃষি খাতের অবদান ১৩.৪৭%। স্থিরমূল্যের ভিত্তিতে, ২০২০-২১)। ক্রমহ্রাসমান কৃষি জমি, ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা ও ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাহিদার বিপরীতে জিডিপিতে ধনাত্মক ধারা অব্যাহত রেখে যে গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের কৃষি তা একটা বিশ্ব অঙ্গনে বড় অর্জন।
অন্যান্য দেশের তুলনায় মোট জমি কম হলেও সম্প্রতি কৃষিতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির ফলে বাংলাদেশ আজ বিশ্ব পর্যায়ে ধান, পাট, কাঁঠাল, আম, পেয়ারা, আলু, সবজি ও মাছ উৎপাদনে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। বর্তমানে বাংলাদেশ বিশ্বে ধান উৎপাদনে ৩য়, পাট উৎপাদনে ২য়, পাট রপ্তানিতে ১ম, সবজি উৎপাদনে ৩য়, আলু ও আম উৎপাদনে ৭ম, পেয়ারা উৎপাদনে ৮ম এবং মোট ফল উৎপাদনে ২৮তম স্থান র্অজন করছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাফল্যের যে ভিত্তি স্থাপন করে গেছেন তাঁর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক দুঃসময়ে দেশের হাল ধরে দূরদর্শী ও সাহসী বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে বিশ্ব দরবারে দেশকে এক বিশাল সফলতায় নিয়ে গেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এই স্বল্পকালীন গত ১০-১২ বছরের শাসনের সাফল্যও অনেক। কৃষিতে সাফল্য বিবেচনায় প্রধান প্রধান কয়েকটি ফসলের ২০০৯ সালের সাথে তুলনায় ২০২০ সাল পর্যন্ত পরিসংখ্যানে দেখা যায়, চালের উৎপাদনে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৩%, গমের ৪৫%, ভুট্টার ৭৭৫%, আলুতে ১০১%, ডালে ৩৭৫%, তেলবীজে ৮১%, সবজির ক্ষেত্রে ৫৭৮% যা বিশ্বে অভাবনীয়। 
এ দেশে কৃষিকে অগ্রাধিকার দিয়ে জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখেছেন। কৃষিবান্ধব নীতি ও কার্যক্রমের মাধ্যমে দেশ এখন দানাশস্য, সবজি, মাছ ও মাংস উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। সারা বছর এখন শাকসবজি ফলমূল যে কোন মানুষের জন্য সহজলভ্য। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী দিকনির্দেশনায় এবং  কৃষি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে মাননীয় কৃষিমন্ত্রী কৃষিবিদ ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক এমপি মহোদয়ের পরিকল্পনা ও নেতৃত্বে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরসহ কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ সকল দপ্তর-সংস্থা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে পারছে বিধায় দেশে এখন খাদ্য নিরাপত্তা বিরাজমান।
স্বাধীনতা পরবর্তী ১৯৭২ সালে কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকা-কে জোরদার করার লক্ষ্যে তুলা উন্নয়ন বোর্ড, তামাক উন্নয়ন বোর্ড, হর্টিকালচার বোর্ড এবং ১৯৭৫ সালে কৃষি পরিদপ্তর (পাট উৎপাদন), কৃষি পরিদপ্তর (সম্প্রসারণ ও ব্যবস্থাপনা) নামে ফসলভিত্তিক স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠানসমূহ সৃষ্টি করা হয়। পরবর্তীতে ফসল প্রযুক্তি সম্প্রসারণে নিয়োজিত ছয়টি সংস্থা যথা কৃষি পরিদপ্তর (পাট উৎপাদন), কৃষি পরিদপ্তর (সম্প্রসারণ ও ব্যবস্থাপনা), উদ্ভিদ সংরক্ষণ পরিদপ্তর, হর্টিকালচার বোর্ড, তামাক উন্নয়ন বোর্ড এবং সার্ডি ঈঊজউও (ঈবহঃৎধষ ঊীঃবহংরড়হ জবংড়ঁৎপবং উবাবষড়ঢ়সবহঃ ওহংঃরঃঁঃব) একীভূত করে বর্তমান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সৃষ্টি করা হয়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মিশন বা অভিলক্ষ্য হলো ‘টেকসই ও লাভজনক ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি নিশ্চিত করণের লক্ষ্যে দক্ষ, ফলপ্রসূ, বিকেন্দ্রীকৃত, এলাকানির্ভর, চাহিদাভিত্তিক এবং সমন্বিত কৃষি সম্পসারণ সেবা প্রদানের মাধ্যমে সকল শ্রেণির কৃষকের প্রযুক্তি জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধিকরণ।’ কৃষি বিভাগ হিসেবে পূর্বে প্রশিক্ষণ ও পরিদর্শন (টিএন্ডভি) পদ্ধতির মাধ্যমে এবং বর্তমানে ‘দলীয় সম্প্রসারণ পদ্ধতি’র মাধ্যমে দেশের কৃষি ও কৃষককে অত্যন্ত সফলতা ও সুনামের সাথে সেবা প্রদান করেছে। এক কথায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দায়িত্ব হলো সকল শ্রেণির চাষিদেরকে তাদের চাহিদাভিত্তিক ফলপ্রসূ ও কার্যকর সম্প্রসারণ সেবা প্রদান করা যাতে তারা তাদের সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার করে স্থায়ী কৃষি ও আর্থসামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) বর্তমানে কৃষি মন্ত্রণালয়াধীন দেশের সর্ববৃহৎ কৃষি সম্প্রসারণ সেবা প্রদানকারী সংস্থা হিসেবে দেশের কৃষির উন্নয়ন ও খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সংস্থাটি দলভিত্তিক সম্প্রসারণ সেবা প্রদান পদ্ধতির মাধ্যমে কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক উদ্ভাবিত লাগসই সকল প্রযুক্তিসহ এই সময়ে ২০০টিরও বেশি ফসলের উৎপাদনে বীজ ব্যবস্থাপনা; মাটি, সেচ ও সার ব্যবস্থাপনা; ফসল সংগ্রহোত্তর ব্যবস্থাপনা, প্রক্রিয়াজাতকরণ, কৃষি যান্ত্রিকীকরণ, মানসম্পন্ন কৃষি উপকরণ সহজলভ্যকরণ ও বিপণন প্রযুক্তির সম্প্রসারণসহ বিভিন্ন দুর্যোগে কৃষকের পাশে থেকে সেবা প্রদানের মাধ্যমে নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং গ্রামীণ আর্থসামাজিক উন্নয়নে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে।
এই অধিদপ্তর মাঠ ফসলের পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবিলায় বিভিন্ন ফসলের এলাকাভিত্তিক অভিযোজন কলাকৌশলও মাঠপর্যায়ে সম্প্রসারণ করছে। এছাড়াও ভাসমান পদ্ধতিতে সবজি ও মসলা চাষ সম্প্রসারণ করে সবজি ও মসলা উৎপাদন বৃদ্ধি করার কাজ চলমান রয়েছে। প্রচলিত কৃষির পাশাপাশি উচ্চমূল্যের সবজি চাষ এবং অপ্রচলিত ও ট্রপিক্যাল অঞ্চলের বিদেশি ফলমূল জনপ্রিয় করাসহ এর উৎপাদন বৃদ্ধিতেও অবদান রাখছে। পরিবেশ সংরক্ষণের মাধ্যমে সেচকাজে ভূউপরিস্থ ও ভূগর্ভস্থ পানির সুসমন্বিত ও সুপরিকল্পিত ব্যবহার নিশ্চিতকরণে প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। সংস্থাটির বিভিন্ন উদ্যোগ ও কার্যক্রমের ফলে বর্তমানে দেশের কৃষি জমি চাষাবাদের ক্ষেত্রে প্রায় ৯৫% যান্ত্রিকীকরণ সম্ভব হয়েছে। ফসল সংগ্রহ ও পরবর্তী ব্যবস্থাপনায় কৃষি যান্ত্রিকীকরণ সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বিশেষ কর্মসূচির আওতায় কৃষিযন্ত্র ক্রয়ে ৫০-৭০ শতাংশ উন্নয়ন সহায়তা (ভর্তুকি) প্রদান করা হচ্ছে। 
বর্তমান কৃষি বান্ধব সরকার ২০০৯ সালে দ্বিতীয় দফায় রাষ্ট্র পরিচালনায় এসেই কৃষিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে নানামুখি পরিকল্পনা ও কার্যক্রম শুরু করে। কৃষি যান্ত্রিকীকরণ তার মধ্যে অন্যতম। জুলাই, ২০১৯ থেকে ডিসেম্বর ২০২২ পর্যন্ত কম্বাইন হারভেস্টার, রাইস ট্রান্সপ্লান্টার, পাওয়ার টিলারসহ মোট ৭৪৯৮০টি কৃষি যন্ত্রপাতি ডিএই’র মাধ্যমে কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। যািন্ত্রকীকরণ তরান্বিত করতে গত দুই বছরেই বিতরণ করা হয়েছে ৩৮৬৫টি কৃষি যন্ত্র। ২০২০-২৫ বছরের মধ্যে মোট ৫১৩০০টি কৃষি যন্ত্র বিতরণের জন্য একটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
কৃষি উপকরণ ও কৃষি ঋণ সহজে বিতরণের লক্ষে সংস্থাটি ইতোমধ্যে ২,০৫,৯৯,৮৬৯ জন কৃষকের মধ্যে কৃষি উপকরণ সহায়তা কার্ড বিতরণ করেছে এবং দেশের কৃষকগণের মাঝে নতুন নতুন প্রযুক্তি সম্প্রসারণ ও আপৎকালীন কৃষি সহায়তা প্রদানে নিয়মিত প্রণোদনা ও পুনর্বাসন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।
আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজির (ঝউএ) লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ইতোমধ্যে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা ও লক্ষ্যমাত্রা প্রণয়নসহ তা বাস্তবায়ন করছে। বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য কর্মপরিকল্পনাসমূহ হলো, ২০৩০ সালের মধ্যে কৃষিজ উৎপাদনশীলতা দ্বিগুণ করা; খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন ও পুষ্টি নিশ্চিতকরণ; প্রতিকূলতাসহিষ্ণু নতুন নতুন জাত ও কৃষিনীতি বাস্তবায়ন করে উৎপাদনশীলতা ও উৎপাদন বৃদ্ধি; চরাঞ্চলে ও পাহাড়ে টেকসই কৃষি সম্প্রসারণ; সরিষা, বাদাম, তিল ও অন্যান্য তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধিকরণ; দেশের দক্ষিণাঞ্চলে ও হাওরাঞ্চলে ভাসমান সবজি চাষ সম্প্রসারণের উদ্যোগ গ্রহণ; রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার কমানো নিশ্চিতকরণ; মাটির স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতকরণ; কৃষি জমির সর্বোত্তম/সুষ্ঠুব্যবহার নিশ্চিতকরণ এবং পতিত জমি শতভাগ চাষের আওতায় আনয়ন; মোবাইলসহ ই-কৃষির মাধ্যমে               কৃষকদের তথ্য প্রাপ্তির ব্যবস্থা জোরদারকরণ; সমন্বিত কৃষি যান্ত্রিকীকরণ এবং কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির সাথে সাথে তা প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য কৃষি পণ্যভিত্তিক ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প গড়ে তোলা।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ‘এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে’। এই আদেশ পালনের জন্য দেশের যে কোন সময়ের সম্ভাব্য খাদ্য সংকট মোকাবিলায় মাননীয় কৃষিমন্ত্রী মহোদয়ের পদক্ষেপগুলো আস্থার সাথে বাস্তবায়ন করছে। কৃষি জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে বসতবাড়ির আঙ্গিনাসহ পতিত জমিতে তৈরি করা হচ্ছে পারিবারিক পুষ্টি বাগান। যেখানে বাড়ির পাশে শাকসবজি ও  ফুল ফল চাষ করে বারো মাসের পুষ্টির চাহিদা পূরণের চেষ্টা করা হচ্ছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মাঠ পর্যয়ের কর্মীদের মাধ্যমে কৃষকদের ফেলে রাখা বাড়ির আঙিনাসহ পতিত জমিতে পারিবারিক পুষ্টি বাগান তৈরি করতে উদ্বুদ্ধ করে আসছে। কৃষকের বাড়িতে এই পারিবারিক পুষ্টি বাগান তৈরির করতে প্রণোদনা প্যাকেজসহ সার্বক্ষণিক কাজ করছেন কৃষি কর্মকর্তাগণ। এর আওতায় গ্রামের মানুষ বসতবাড়ির আঙিনা, পুকুর ও খালের পাড়, বাড়ির আশপাশ, প্রতি ইঞ্চি অব্যবহৃত ও অনাবাদি জমিতে শাকসবজি ও ফলমূল উৎপাদন করবেন। এতে মানুষের পুষ্টিহীনতা দূর হওয়ার পাশাপাশি খাদ্যনিরাপত্তাও নিশ্চিত হবে। এখানে পুষ্টি মডেল এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যে একজন কৃষক সারা বছর এখান থেকে কিছু না কিছু পাবেন। কখনো শাকসবজি থাকবে, আবার কখনো থাকবে ফল। এ জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। যেসব পরিবারের এক থেকে দেড় শতাংশ পরিমাণ পতিত জমি আছে, তারা এই প্রকল্পের আওতায় সুবিধা পাবে।
বিভিন্ন পরিস্থিতিতে কৃষকদের জন্য সহায়তামূলক নানা ধরনের পদক্ষেপ নেয় সরকার। কৃষকদেরকে এসব সহায়তা প্রদানের একমাত্র মাধ্যম হলো ডিএইর সম্প্রসারণ কর্মীরা। ডিএইর কর্মীরা প্রধানত কয়েকটি কাজ করে থাকে যার মধ্যে অন্যতম হলো নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের সিদ্ধান্ত মাঠপর্যায়ে বাস্তবায়ন। অন্যটি কৃষকদের অনুপ্রেরণার পাশাপাশি তাদের সঙ্গে আস্থার সম্পর্ক তৈরি। এভাবে কৃষকের চাহিদা সম্পর্কে জানার পর প্রয়োজনীয় সরকারি দিকনির্দেশনা বা কর্মসূচির বাস্তবায়ন তাদের মাধ্যমেই হয়ে থাকে। উচ্চফলনশীল শস্যের নতুন জাত ও আবাদের পদ্ধতি সম্পর্কিত প্রায় সব তথ্যই কৃষকরা তাদের কাছে পাচ্ছেন। জানতে পারছেন মাটির গুণাগুণ, সার, কীটনাশক ও বীজ ব্যবহার এবং উৎপাদিত শস্যের বাজারজাতের তথ্য। ফসল আবাদে নানা ধরনের পরামর্শ ও তথ্য দিয়ে কৃষকদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন কৃষি সম্প্রসারণ কর্মীরা। এভাবেই টেকসই হচ্ছে দেশের কৃষি পণ্য উৎপাদন।
রপ্তানি বাজারে প্রতিযোগিতা করে টিকে থাকতে হলে কৃষি পণ্যের মান বাড়াতে কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে দপ্তরটি। সেক্ষেত্রে উৎপাদন পর্যায় থেকে জাহাজীকরণ পর্যন্ত পণ্যের মান আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিতে সক্ষমতা তৈরি করতে পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে সকল পর্যায়েই। ইতোমধ্যে এঅচ এর মাধ্যমে কৃষি পণ্য উৎপাদন করতে আমাদের কাজ চলছে। এই প্রক্রিয়ায় আম উৎপাদন করে ইউরোপিয়ান ও আমেরিকান বিভিন্ন চেইন মার্কেটে বিক্রি করে ভালো সাড়া পাওয়া গেছে। সরকারের সরাসরি উদ্যোগে চেষ্টা হচ্ছে পণ্য ও সেবার পরিধি বাড়াতে।
কৃষি সম্প্রসারণে আইসিটি ও নতুন নতুন উদ্ভাবনী প্রক্রিয়া ব্যবহারেও সংস্থাটি অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। উল্লেখ্য, ইতোমধ্যে ডিএইর সহায়তায় “কৃষি বাতায়নে” প্রায় ৮০ লক্ষ কৃষকের তথ্যাদি সন্নিবেশিত করা হয়েছে। এ ছাড়া, ফসলের সমস্যার সমাধানকল্পে সংস্থা কর্তৃক উদ্ভাবিত “কৃষকের জানালা”, “কৃষকের ডিজিটাল ঠিকানা”, “ডিজিটাল বালাইনাশক নির্দেশিকা” ব্যবহার হচ্ছে এবং এগুলো জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সমাদৃত ও পুরস্কৃত হয়েছে।
কৃষিতে অর্জিত সাফল্যের ধারাবাহিকতায় ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ গড়তে এবং লাগসই খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণসহ কৃষকের আর্থসামাজিক উন্নয়নে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। সকল ধরনের প্রতিকূলতা মোকাবিলা করেই কৃষিতে সাফল্য বয়ে আনছে ডিএই। কৃষি ক্ষেত্রে সরকারের লিড এজেন্সির ভূমিকায় থেকে সব ধরনের দুর্দিন ও সুদিনে কৃষকের পাশে থাকেন ডিএইর কর্মীরা। গবেষণা কার্যক্রম ও কৃষকের মধ্যে তারা যোগসূত্র হিসেবে কাজ করেন। সম্প্রসারণ কর্মীরা কৃষকদের সঙ্গে নিজেদের কতটুকু মানিয়ে নিচ্ছেন, সেটির ওপর নির্ভর করে দেশের খাদ্য উৎপাদন ও  খাদ্যনিরাপত্তা। সেজন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণের পাশাপাশি সম্প্রসারণ কর্মীদের প্রযুক্তিগতভাবে আরও দক্ষ করে তুলতে কাজ করছে সংস্থাটি। এতে যেমন কৃষকদের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক তৈরি হয়, তেমনি সরকারের পরিকল্পনা বাস্তবায়নও সহজ হয়।
কৃষি উন্নয়নে বাংলাদেশের সার্বিক সাফল্যে আন্তর্জাতিক অনেক স্বীকৃতি অর্জিত হয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হলো এসডিজি বাস্তবায়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পুরস্কার এবং জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি কর্তৃক ক্ষুধার বিরুদ্ধে আন্দোলনের অবদানের  স্বীকৃতিস্বরূপ সম্মানজনক ‘সেরেস’ (ঈঊজঊঝ) পদক প্রাপ্তি, যা  কৃষি ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রগতির একটি বড় অর্জন। এখানে কাজের অংশীদার হতে পেরে ডিএই পরিবার গর্বিত। 
বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত রূপকল্প ২০২১ ও ২০৪১ এর জাতীয় উন্নয়ন কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের সাথেও রয়েছে সংস্থাটি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ’ এর স্বপ্ন বাস্তবায়নে তার অনুসৃত নীতিমালার আলোকেই বর্তমান সরকার কৃষিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছেন। ডিএই সরকার কর্তৃক গৃহীত সকল পরিকল্পনা সফলভাবে বাস্তবায়নে প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার কারণেই সাম্প্রতিক সময়ে কৃষিতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির ফলে গ্রামীণ ও সর্বোপরি দেশের সার্বিক সমাজ ও অর্থনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। দেশে বিদ্যমান যে কোন ধরনের প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে আধুনিক, ব্যয় সাশ্রয়ী ও লাভজনক বাণিজ্যিক কৃষি ব্যবস্থা প্রবর্তনের ক্ষেত্রে প্রণীত রোডম্যাপ কার্যকর করতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর দীপ্ত পায়ে সার্বক্ষণিক সরকার ও কৃষকের সাথে থেকে কাজ করে যাবে।


লেখক : মহাপরিচালক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, খামারবাড়ি, ফার্মগেট, ঢাকা। ফোন : ০২৫৫০২৮৩৬৯, ই-মেইল :dg@dae.gov.bd


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon